Friday, April 10, 2009

বাংলা গানের কথা

নিজের মনেই জেগে ওঠা সুরের চাহিদা মেটাতে বাংলা গান গুলো নিয়ে নাড়াচাড়া করতে ইচ্ছে করে। সে ইচ্ছে মেটাতে কিছু গানে সংগ্রহ।

শিশুদের গান
প্রেমের গান
বির‌হের গান
জীবনমুখী গান
বাউল
লালন
রবীন্দ্র
গণ সংগীত
দেশের গান


শিশুদের গান
আমাদের দেশটা স্বপ্নপুরী
একদিন ছ‌ুটি হবে


একদিন ছ‌ুটি হবে
একদিন ছুটি হবে, অনেক দূরে যাব
নীল আকাশে সবুজ ঘাসে খুশিতে হারাব।

যেখানে থাকবেনা কোন বাধন,থাকবেনা নিয়মের কোন শাসন,
পাখি ‌হয়ে উড়ব, ফুল হয়ে ফুটব,
পাতায় পাতায় শিশির হয়ে হাসি ছড়াব।

অজানা পথে অচিন দেশে, ঝর্ণধারা হয়ে যাব ভেসে
তারা হয়ে উঠব, মেঘ হয়ে ভাসব
লুকোচুরি খেলার ছলে লুকিয়ে রব।


আমাদের দেশটা স্বপ্নপুরী
আমাদের দেশটা স্বপ্নপুরী, সাথী মোদের ফুলপরি
ফুলপরি লালপরি লালপরি নীলপরি সবার সাথে ভাব করি, সবার সাথে ভাব করি

এখানে মিথ্যে কথা কেউ বলে না এখানে অসৎ পথে কেউ চলেনা
পড়ার সময় লেখাপড়া, কাজের সময় কাজ করা,
খেলার সময় মোরা খেলা করি, খেলা করি

এখানে মন্দ হ‌তে কেউ পারে না, এখানে নিন্দা কভু কেউ করে না
নেই কোন দুঃখ অপমান, ছোট বড় সবাই সমান
ভালবাসা দিয়ে জীবন গড়ি, জীবন গড়ি


প্রেমের গান
তোমারে লেগেছে এত যে ভাল
তুমি যে আমার কবিতা
দুটি মন আর নেই দুজনার
এই রাত তোমার আমার
সাতটি তারার এই তিমির
এই রূপালি চাঁদে তোমারই হাত দুটি


তোমারে লেগেছে এত যে ভাল
তোমারে লেগেছে এত যে ভাল, চাঁদ বুঝি তা জানে
রাতের বাসরে দোসর হয়ে, তাই সে আমারে টানে।।

রাতের আকাশে তারার মিতালি, আমারে দিয়েছে সুরের গীতালি
কত যে আশায় তোমারই নামে, জ্বালিয়ে আমি রেখেছি দীপালি
আকুল ভোমরা বলে সে কথা বকুলের কানে কানে।।

এত যে কাছে চেয়েছি তোমারে, এত যে প্রীতি দিয়েছ আমারে
এত যে পাওয়া কেমনে সহিব, একাকী আমি নিরব আঁধ‌ারে
আকুল পাপিয়া ছড়ায় সে কথা, বাতাসের কানে কানে।।


তুমি যে আমার কবিতা
তুমি যে আমার কবিতা, আমার গানের রাগিনী


দুটি মন আর নেই দুজনার
দুটি মন আর নেই দুজনার রাত বলে আমি সাথী হব যে
ফাগুনের রাতে আমি রূপকথা হয়ে কাছে রব যে।।

ফুল বলে রঙে আর ছেও না, পাখি বলে আর গান গেও না
আমাদের মিতালীর মায়াতে কানে কানে কত কথা কব যে

শুকতারা বলে আমি আছি তাই দিশাহারা হতে আর ভয় কি?
পাছে ঘুম ঝরে পড়ে দুচোখে, হাসি মুখে তাই জেগে রব যে



এই রাত তোমার আমার
এই রাত তোমার আমার,ঐ চাঁদ তোমার আমার, শুধু দুজনে
এই রাত শুধু যে গানের, এই ক্ষণ এদুটি প্রাণের, কুহু কুজনে

তুমি আছে আমি আছি তাই অনুভবে তোমারে যে পাই
শুধু দুজনে ---


সাতটি তারা এই তিমির

সাতটি তারার এই তিমির, একটি প্রেমের শান্ত নীড়
আজ আকাশে নেই ভাবনা, চন্দ্রকলায় ছন্দমীঢ়।।

দিয়েছ এনে একটি কলি ভাবনা জাগে কি যে বলি
বলতে গিয়ে তোমায় দেখে লাগে মনে ভয়
জানি কি যে হল, কেন এমন হয়।।

বোঝনা কেন এ নিরবতা এই তো আমার সকল কথা

তুমি তো জান আমার সবই, তোমার মত নইত কবি
তোমার মত বলা তো আর সহজ কথা নয়
নিরবে নিলাম জেনে তোমার পরিচয়।।



এই রূপালি চাঁদে তোমারই হাত দুটি
এই রূপালি চাঁদে তোমারই হাত দুটি মেহেদি লাল রঙে আমি সাজিয়ে দিতে চাই
আহা কি শোনালে মন রাঙালে, এভাবে সারা জীবন যেন তোমাকে কাছে পাই

শধু একটি গোলাপ চেয়ে পাঠালে চিঠি শুনে মনের আকাশে ভাসে তারা মিটিমিটি
তুমি কাছে এসে এ হৃদয় রাঙালে যদি তাতে আমারই নাম লিখে যাই

আমি তোমাকে পেয়ে সুখে আছি যেন ফুলের বুকে অলি কত কাছাকাছি
এই মেহেদি রাতে সাথে আছ তুমি যেন তুমি বিনে কিছু নাই, তোমাকে কাছে পাই







বির‌হের গান
জীবনমুখী গান
বাউল গান
লালন গীতি
রবীন্দ্র সংগীত


গণ সংগীত
বিস্তীর্ণ দুপারের
প্রতিধ্বনি শুনি


বিস্তীর্ণ দুপারের
বিস্তীর্ণ দুপারের অসংক্ষ্য মানুষের হাহাকার শুনেও নিঃশব্দে নিরবে ও গঙ্গা তুমি বইছ কেন?

নৈতিকতার স্খলন দেখেও মানাবতার পতন দেখেও নির্লজ্জ অলস ভাবে বইছ কেন?

জ্ঞান বি‌হীন নিরব ঘরের খাদ্য বিহীন নাগরিকের
সহস্র বরষার উন্মাদনার মন্ত্র দিয়েও লক্ষ জনেরে সবল সংগ্রামী আর অগ্রগামী করে তোলনা কেন?

ব্যক্তি যদি ব্যক্তি কেন্দ্রিক, সমষ্টি যদি ব্যক্তিত্বরোহী তবে শিথিল সমাজকে ভাঙ না কেন?
সহস্র বরষার উন্মাদনার মন্ত্র দিয়েও লক্ষ জনেরে সবল সংগ্রামী আর অগ্রগামী করে তোলনা কেন?

স্রোতস্বিনী কেন নাহি বও, তুমি নিশ্চই জা‌‌‌হ্ণবী নও
তা‌হলে প্রেরণ দাও না কেন?
উন্মত্ত ধরার কুরুক্ষেত্রের শর শয্যাকে আলিঙ্গন করা লক্স কোটি ভারত বাসিকে জাগালে না কেন?


প্রতিধ্বনি শুনি: ভুপেন হাজারিকা
মোর গায়ের সীমানার পাহাড়ের ওপারে নিশিথ রাত্রির প্রতিধ্বনি শুনি
কান পেতে শুনি আমি বুঝিতে না পারি, চোখ মেলে দেখি আমি দেখিতে না পারি
চোখ বুজে ভাবি আমি ধরিতে না পারি, হাজার পাহাড় আমি ডিঙুতে না পারি


হতে পারে কোন যুবতীর শোক ভরা কথা, হতে পারে কোন ঠাকুমার রাতের রূপকথা
হতে পারে কোন কৃষকের বুক ভরা ব্যাথা, চেনা চেনা সুরটিকে কিছুতে না চিনি।

শেষ হল কোন যুবতীর শোক ভরা কথা, শেষ হল কোন ঠাকুমার রাতের রূপকথা
শেষ হল কোন কৃষকের বুক ভরা ব্যাথা, চেনা চেনা সুরটিকে কিছুতে না চিনি।

মোর কাল চুলে সকালের সোনালী রোদ পড়ে, চোখের পাতায় লেগেথাকা কুয়াশা যায় সরে
জেগে ওঠা মানুষের হাজার চিতকারে, আকাশ ছোঁয়া অনেক বাঁধার পাহাড় ভেঙে পড়ে
মানব সাগরের কোলা‌হল শুনি, নতুন দিনের যেন পদধ্বনি শুনি।

Tuesday, March 10, 2009

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনায় অটোয়াবাসীদের শোক ও সং‌হতি প্রকাশ

ঢাকার পিলখানা বিডিআর সদর দফতরে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক নৃশংস ঘটনায় আর সকলের মতই হতবাক ও মর্মাহত হন কানাডার রাজধানী অটোয়া অঞ্চলে বসবাসরত বাংলাদেশীগণ। এ প্রেক্ষিতে গত ৮ই মার্চ ২০০৯, স্থানীয় কার্লটন ও অটোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশী ছাত্র-ছাত্রীগণ এবং ক'জন স্থানীয় বাংলাদেশী মিলে এক নাগরিক শোকসভার আয়োজন করেন কার্লটন বিশ্ববিদ্যালয়ের বেল থিয়েটার মিলনায়তনে। অটোয়াবাসী বাংলাদেশীরা ব্যাপকভাবে সাড়া দেন জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে ঐক্যবদ্ধ হবার উদাত্ত আহবানে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে সমবেত সকলে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। পরে ঘটে যাওয়া নির্মম শোকাবহ এই ঘটনার আলোক-চিত্রভিত্তিক একটি স্লাইড প্রদর্শিত হয় শোক সংগীতের আবহে। অটোয়াবাসীদের মধ্যে যাঁরা তাঁদের নিকটাত্মীয়, বন্ধু বা সহকর্মীদের হারিয়েছেন তাঁরা স্মৃতিচারণ করেন হারানো প্রিয়জনের সাথে কাটানো আবেগঘন মুহূর্তগুলোর। বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন অনেকে।

অনুষ্ঠানে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে এবং ঘটনার স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূক শাস্তি দাবী করে স্মারকলিপি পাঠ করা হয়। এতে এই অশান্ত সময়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে ঐক্যের শক্তিতে বলীয়ান হওয়ার এবং সদ্যপ্রতিষ্ঠিত গণতন্ত্রকে সুসংহত করার আহবান জানানো হয়। উপস্থিত সকলের স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিটি পরে বাংলাদেশ দূতাবাস মারফত বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে সকলে সমবেত ভাবে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করেন।

===================================================

স্মারকলিপি


প্রিয় বাংলাদেশের জনসাধারণ,

গত ২৫শে ফেব্রুয়ারী ২০০৯ ঢাকার পিলখানাস্থ বাংলাদেশ রাইফেলস সদর দপ্তরে ঘটে যাওয়া অনাকাংক্ষিত মর্মান্তিক ঘটনার প্রেক্ষিতে আমরা কানাডার অটোয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশী নাগরিক বৃন্দ একটি নাগরিক শোক সভায় মিলিত হয়েছি। এই অপ্রীতিকর ধ্বংসাত্মক ঘটনায় মর্মান্তিক ভাবে নিহত বাংলাদেশের ৫৮ জন দক্ষ সেনা কর্মকর্তা, তাঁদের পরিবারের পাঁচ সদস্য, সীমান্তরক্ষী বাংলাদেশ রাইফেলস এর ছয়জন ও সেনাবাহিনীর একজন সহ মোট সাতজন চৌকষ সৈনিক এবং রিকশাচালক ও ছাত্রসহ তিন জন নিরীহ পথচারীর সকলের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি। এছাড়া এখনো নিখোঁজ রয়েছেন হতভাগ্য চারজন সেনা কর্মকর্তা। নিহত ও নিখোঁজ সকলের পরিবাবরবর্গ যে কী গভীর শোকে আচ্ছন্ন তা বর্ণনা করার ভাষা আমাদের নেই। শুধু এটুকু আপনাদের জানাতে চাই, আপনাদের হৃদয়ের রক্তক্ষরণ আমাদেরকেও ব্যাথিত করে, আপনাদের শোকে আমরা সমব্যাথী, আমরা আপনাদের পাশেই আছি।এছাড়া আমরা এ ঘটনায় আহত সকলের আশু আরোগ্য কামনা করছি।

এই অকল্পনীয় বিধ্বংসী ঘটনায় জাতি তার সেরা ক’জন সন্তানকে হারিয়েছে। জাতির যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে, তাতে আমরা মর্মাহত ও বাকরুদ্ধ। আজ বাংলাদেশের বড় দুর্দিন। অতীত আমাদের শিখিয়েছে, দুর্দিনে এই জাতি সকল বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হতে জানে। এই অশান্ত সময়ে, জাতির এই চরম দুর্দশার সময়ে আমরাও তাই সমস্ত আবেগ, ক্রোধ, প্রতিহিংসার ঊর্ধ্বে উঠে শান্তির পক্ষে, মিলনের পক্ষে বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের প্রতি একাত্মতা ঘোষনা করছি।

জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সরকার এবং তার সহযোগী সকল সামরিক, আধা-সামরিক ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং প্রচার মাধ্যম সহ সকলে যে বিচক্ষণ ও দায়িত্বশীল ভূমিকা রেখেছেন তা প্রশংসনীয়। আমরা চাই, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে যথাসম্ভব স্বচ্ছতার সাথে দ্রুত এই আত্মবিধ্বংসী ঘটনার মূল উদঘাটিত হোক এবং দেশের প্রচলিত আইনে অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। এই ঘটনার পেছনে দীর্ঘমেয়াদী কোন বৈষম্য বা ব্যর্থতা দায়ী থাকলে তার প্রতিকারের ব্যবস্থা করা হোক। সেই সাথে,আমরা বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসবাদী তৎপরতা, প্রতিরক্ষা বাহিনীর অন্তর্ঘাত, রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন, এবং রাজনৈতিক বিদ্বেষ প্রসূত সকল হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ তদন্ত এবং বিচার দাবী করছি।

আমরা চাইনা কোন অশুভ শক্তির ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে এমন আর কোন আত্মঘাতী সংঘাতে লিপ্ত হোক। দীর্ঘদিনের অস্বাভাবিক অবস্থা পেরিয়ে বাংলাদেশ আজ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। আমরা চাই দেশি-বিদেশি সকল চক্রান্ত প্রতিহত করে জয়ী হোক, দীর্ঘজীবি হোক বাংলাদেশের বহু ত্যাগে অর্জিত এই গণতন্ত্র।

কার্লটন বিশ্ববিদ্যালয় ও অটোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশী ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ
অটোয়া-প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিকবৃন্দ
৮ই মার্চ ২০০৯, অটোয়া, কানাডা

============================================

Tuesday, March 3, 2009

অনেক দেরিতে হলেও বাংলা লিখতে শিখে আনন্দ!

বাংলায় ছাড়া মনের এলোমেলো চিন্তাগুলোকে ঠিক সাজিয়ে লিখতে পারিনা। আবার অনেকদিন কম্পিউটার নাড়াচাড়া করে এমন বদভ্যাস ‌হয়েছে যে কাগজের খাতায় আর কলম তেমন চলে না। ওদিকে নিজের ইচ্ছেমত লেখার জায়গা ব্লগ, সেটা দিনে দিনে বেড়ে উঠেছে, অনেকটা আমার অগোচরেই।

মনের জানালা খুলে পথিবীর সবাইকে ‌হাক ছেড়ে ডাকার জন্য ব্লগের চেয়ে সহ‌জ উপায় বোধ‌হয় আর হয় না। তো বাংলায় ব্লগোমণ্ডল চালু হ‌য়েছে তাও প্রায় দু-তিন বছর, ওটা বেড়ে উঠেছে আমার চোখের অগোচরেই। ‌‌‌গত দু-বছরে জরুরী অবস্থায় খবরাখবর পড়তে গিয়ে ব্লগোমণ্ডলে পা দেয়া। তার পরেও বাংলা ব্লগোমণ্ডলের সাম‌োয়ার-ইন আর সচলায়তন বেড়ে উঠেছে কোন ফাকে খেয়ালই করিনি। কারন বোধ করি মধ্যবিত্ত-নির্জীবতা।

২০০৩ এর ইরাক যুদ্ধের সময়ে একবার মনে নাড়া পড়েছিল, বাইরের জগত দেখবার জন্য। সেটা চলেছিল বোধ করি ২০০৪ এর মাঝ পর্যন্ত। প্রথম বাংলায় নিবন্ধ লিখলাম মনে ‌হয় ফ্রি-সফটওযার নিয়ে, ২০০৩ এর নভেম্বরে। পরে, ২০০৪ এর একুশে ফেব্রুয়ারীতে ম্যাকগিলে একটা অনুষ্ঠান করার সূত্রধরে মথায় বাংলা চিন্তার আলোড়ন আরো জোরালো হল। সেইধাক্কায় কনকর্ডিয়ার ম্যাগাজিনে বাংলায় একটা ছোট্ট নিবন্ধ লেখা। তারপর, একাই বাংলা উইকিপিডিয়ার সূচনা করা, ইন্টারফেস অনুবাদ করা দিয়ে। ঐ পর্যন্তই। তারপরে সংসারের প্যাচে পড়ে আবার গেরস্থালীতে মনোনিবেশ, সেটা চলল ২০০৮ পর্যন্ত, অনে--ক লম্বা ঘুম।

তারপর ইদানিং কালে রিসেশন শুরু ‌হয়েছে, মন উদাস ‌হয় প্রায়ই, ওয়েবে ঘোরাফেরা একটু বেড়েছে। ঐ সময়েই, ‌হঠাত একদিন সকালে একটা ইমেল পেলাম, বুশের মুখে জায়িদির জুতা মারা নিয়ে। মাথা চাগান দিল। সচলায়তন মনে ‌‌‌হয় ঘুরতাম তারও আগেথেকেই, তবে মন্তব্য করার সা‌হ‌‌‌স হ‌তনা, কিম্বা নিষ্প্রয়োজন মনে ‌হত। ঐদিন ‌হঠাত একটা পোস্ট এ দুই লাইনের একটা মন্তব্য করতে মন চাইল। ব্যস আর কি? একবার যখন হাত খুলল, সহজে কি আর থামে? সেই থেকেই সচলায়তন ব্লগে লেখা শুরু। এমনিতেও তখন মনের কথাগুলো লিখব লিখব বলে ‌হাসফাস করছিলাম। এর আগেই বা সে-সময়েই বোধ হ‌য় ব্লগার-ডট-কম-এও একটা পেজ খুলেছিলাম। কিন্তু ঐ যে, বাংলায় না লেখলে তো মন ভরে না। তার কদিন পর দেখি সচলায়তনে বুয়েটের কি এক ইস্যু নিয়ে তুমুল ঝগড়া ‌হচ্ছে। আর যায় কৈ। আমি কি আর চুপ থাকতে পারি! লম্বা লম্বা মন্তব্য করা শুরু করলাম। তারপর দিন যেতে যতে সচলায়তন আমার বাংলা চর্চার নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠল। দু-চারটা পোস্টও লেখা ‌হয়ে গেল। সচলায়তনের চরিত্রগুলোও চেনাজানা ‌হল, কজনকে ফেসবুকেও ঢোকানো ‌হল। আর ঐ দুচার পাতা লিখতে লিখতেই এক কান্ড! আমার যা ‌হয় আর কি! ঘরে ঢুকে ঘরের লোকের দোষই সবার আগে চোখে পড়ে! ভাবলাম সচলায়তন তো সচলদের জায়গা, লিখিই না ‌হয় মন খুলে! বিধি বাম। আমার অবিমৃশ্যকারিতায় সচলের মডু-কর্তৃপক্ষের মথায় আগুন! দুই দিন ‌হয়নাই আইছেন, আইসাই ঘরের নিয়ম নিয়া কথা! ভাগেন! আমি হ‌লাম গৃ‌হান্তরী।

সেই শোকেই কদিন ধরে বাংলা লেখার অন্য কোন জায়গা খুজছিলাম, যেখানে নিজের ইচ্ছামতো লেখা যাবে। শেষমেষ আজই ‌হঠাত পেয়ে গেলাম, IECBএর শাব্দিক ফায়ারফক্স এক্সটেনশন! IECBএর বলে মনটা আরো ভাল লাগল,ঐ IECBর জন্মের সময়ে আমি তার সথে ছিলাম যে! আর ওর নামটাও তো আমারই দেয়া!

দেখি আজ থেকে এখানেই লিখব। কেউ দেখল কিনা তাতে কি যায় আসে?