বাংলায় ছাড়া মনের এলোমেলো চিন্তাগুলোকে ঠিক সাজিয়ে লিখতে পারিনা। আবার অনেকদিন কম্পিউটার নাড়াচাড়া করে এমন বদভ্যাস হয়েছে যে কাগজের খাতায় আর কলম তেমন চলে না। ওদিকে নিজের ইচ্ছেমত লেখার জায়গা ব্লগ, সেটা দিনে দিনে বেড়ে উঠেছে, অনেকটা আমার অগোচরেই।
মনের জানালা খুলে পথিবীর সবাইকে হাক ছেড়ে ডাকার জন্য ব্লগের চেয়ে সহজ উপায় বোধহয় আর হয় না। তো বাংলায় ব্লগোমণ্ডল চালু হয়েছে তাও প্রায় দু-তিন বছর, ওটা বেড়ে উঠেছে আমার চোখের অগোচরেই। গত দু-বছরে জরুরী অবস্থায় খবরাখবর পড়তে গিয়ে ব্লগোমণ্ডলে পা দেয়া। তার পরেও বাংলা ব্লগোমণ্ডলের সামোয়ার-ইন আর সচলায়তন বেড়ে উঠেছে কোন ফাকে খেয়ালই করিনি। কারন বোধ করি মধ্যবিত্ত-নির্জীবতা।
২০০৩ এর ইরাক যুদ্ধের সময়ে একবার মনে নাড়া পড়েছিল, বাইরের জগত দেখবার জন্য। সেটা চলেছিল বোধ করি ২০০৪ এর মাঝ পর্যন্ত। প্রথম বাংলায় নিবন্ধ লিখলাম মনে হয় ফ্রি-সফটওযার নিয়ে, ২০০৩ এর নভেম্বরে। পরে, ২০০৪ এর একুশে ফেব্রুয়ারীতে ম্যাকগিলে একটা অনুষ্ঠান করার সূত্রধরে মথায় বাংলা চিন্তার আলোড়ন আরো জোরালো হল। সেইধাক্কায় কনকর্ডিয়ার ম্যাগাজিনে বাংলায় একটা ছোট্ট নিবন্ধ লেখা। তারপর, একাই বাংলা উইকিপিডিয়ার সূচনা করা, ইন্টারফেস অনুবাদ করা দিয়ে। ঐ পর্যন্তই। তারপরে সংসারের প্যাচে পড়ে আবার গেরস্থালীতে মনোনিবেশ, সেটা চলল ২০০৮ পর্যন্ত, অনে--ক লম্বা ঘুম।
তারপর ইদানিং কালে রিসেশন শুরু হয়েছে, মন উদাস হয় প্রায়ই, ওয়েবে ঘোরাফেরা একটু বেড়েছে। ঐ সময়েই, হঠাত একদিন সকালে একটা ইমেল পেলাম, বুশের মুখে জায়িদির জুতা মারা নিয়ে। মাথা চাগান দিল। সচলায়তন মনে হয় ঘুরতাম তারও আগেথেকেই, তবে মন্তব্য করার সাহস হতনা, কিম্বা নিষ্প্রয়োজন মনে হত। ঐদিন হঠাত একটা পোস্ট এ দুই লাইনের একটা মন্তব্য করতে মন চাইল। ব্যস আর কি? একবার যখন হাত খুলল, সহজে কি আর থামে? সেই থেকেই সচলায়তন ব্লগে লেখা শুরু। এমনিতেও তখন মনের কথাগুলো লিখব লিখব বলে হাসফাস করছিলাম। এর আগেই বা সে-সময়েই বোধ হয় ব্লগার-ডট-কম-এও একটা পেজ খুলেছিলাম। কিন্তু ঐ যে, বাংলায় না লেখলে তো মন ভরে না। তার কদিন পর দেখি সচলায়তনে বুয়েটের কি এক ইস্যু নিয়ে তুমুল ঝগড়া হচ্ছে। আর যায় কৈ। আমি কি আর চুপ থাকতে পারি! লম্বা লম্বা মন্তব্য করা শুরু করলাম। তারপর দিন যেতে যতে সচলায়তন আমার বাংলা চর্চার নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠল। দু-চারটা পোস্টও লেখা হয়ে গেল। সচলায়তনের চরিত্রগুলোও চেনাজানা হল, কজনকে ফেসবুকেও ঢোকানো হল। আর ঐ দুচার পাতা লিখতে লিখতেই এক কান্ড! আমার যা হয় আর কি! ঘরে ঢুকে ঘরের লোকের দোষই সবার আগে চোখে পড়ে! ভাবলাম সচলায়তন তো সচলদের জায়গা, লিখিই না হয় মন খুলে! বিধি বাম। আমার অবিমৃশ্যকারিতায় সচলের মডু-কর্তৃপক্ষের মথায় আগুন! দুই দিন হয়নাই আইছেন, আইসাই ঘরের নিয়ম নিয়া কথা! ভাগেন! আমি হলাম গৃহান্তরী।
সেই শোকেই কদিন ধরে বাংলা লেখার অন্য কোন জায়গা খুজছিলাম, যেখানে নিজের ইচ্ছামতো লেখা যাবে। শেষমেষ আজই হঠাত পেয়ে গেলাম, IECBএর শাব্দিক ফায়ারফক্স এক্সটেনশন! IECBএর বলে মনটা আরো ভাল লাগল,ঐ IECBর জন্মের সময়ে আমি তার সথে ছিলাম যে! আর ওর নামটাও তো আমারই দেয়া!
দেখি আজ থেকে এখানেই লিখব। কেউ দেখল কিনা তাতে কি যায় আসে?
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment